স্টুডেন্ট লাইফে যা যা শিখলাম

কম্পিউটার সায়েন্স পড়লে সবারই স্বপ্ন থাকে টেক জায়ান্ট কোন কোম্পানি যেমন গুগল, ফেসবুক, অ্যামজন এগুলায় জব করা। আমিও ব্যতিক্রম না। টপ টেক কয়েকটায় অ্যাপ্লাই করে ফেললাম। ভাবলাম অন্তত ইন্টার্ভিউ দিতে ডাকলেও কিছু জ্ঞান অর্জন হবে।

সিলেকশন প্রসিডউর সব কোম্পানিতেই মোটামুটি সেইম। প্রথমে একজন রিক্রুটার কল দেয়। নিজের ব্যাপারে আর ওয়ার্ক ইন্টারেস্ট নিয়ে কথাবার্তা বলার পর প্রোগ্রামিং ইন্টারভিউতে ডাকে। প্রোগ্রামিং ইন্টারভিউতে দুই-একটা টাস্ক দেয় যেগুলা কোড করা লাগে। আর কোড করার সময় কী লজিক অ্যাপ্লাই করলাম, কী কী জিনিস মাথায় রাখতেসি এগুলা বলা লাগে। এরকম আরো দুয়েকটা ইন্টারভিউ এর পর জব অফার আসে আরকি।

যেসব কোম্পানিতে অ্যাপ্লাই করেছিলাম সেগুলোর একটা থেকে কল আসলো। পরে প্রোগ্রামিং ইন্টারভিউ-তেও ডাকলো।

প্রোগ্রামিং ইন্টারভিউ এর সময় প্রচুর নার্ভাসনেস কাজ করে। শত শত অ্যালগরিদম আছে। কোনটা কখন ইউজ করতে হবে জানা লাগে। অথবা কীভাবে ডেটা ইউজ করা লাগবে সেটা ঠিকভাবে ডিসাইড করা লাগে। বেশ স্ট্রেসিং একটা ব্যাপার।

জয়েন করলাম ইন্টারভিউ কলে। ইন্টারভিয়ারের নাম জন। শুরুতে হাই হ্যালো বলে কাজের কথায় চলে গেলাম। প্রথম যে টাস্ক দিলো সেটা বেশ সোজা। কথা বলতে বলতে কোড করলাম। ইন্টারভিউয়ার বেশ খুশি। সেকেন্ড টাস্ক দিলো। এবার আটকে গেলাম। এই প্রবলেম টা পরিচিত কিন্তু কীভাবে সলভ করে ভুলে গেসি।

বললাম, “টাস্কটা চেনা চেনা লাগে কিন্তু অ্যালগরিদমটা মনে পড়তেসে না।”

সে বললো, “প্যারা নাই। একটু চিন্তা করো। আমাদের কাছে যথেষ্ট সময় আছে।”

আমি বললাম, “নাহ। পারবো না মনে হয়। মাথা কাজ করতেসে না।”

সে বললো, “আরে এতো ঘাবড়ানোর কিছু নাই। স্টুডেন্ট লাইফে যা শিখসো, সেখান থেকে যেটা মনে পড়ে সেটাই বলো আমাকে।”

আমি বললাম, “স্টুডেন্ট লাইফ থেকে যেটা মনে পড়ে?”

জন বললো, “হ্যাঁ”

বললাম, “ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি।” শুনে জন বলে উঠলো, “অ্যাঁ? এটা কী আবার? কোন সূত্রটূত্র মনে পড়ে না?”

আমি বললাম, “মনে পড়ে তো।”

সে বললো, “সেটাই বলো, শুনি কী ভাবতেসো।” আমি এক নিঃশ্বাসে বলা শুরু করলাম “চাণক্য মাণিক্য গণ… বাণিজ্য লবণ মণ…”

সে রেগে গেলো, “আরেহ কী বলতেসো? এইগুলা কোন ভাষার কথা? তোমার মাথায় চলতেসেটা কী?”

আমার মাথায় তখন আর কিছু চলতেসে না। শুধু গান বাজতেসে, “শ্রাবণধারায় এতো চেনা কী খুঁজে পাও…”