ব্যাডা মানুষের জাতটাই খারাপ!

ডর্মে আমার রুমের অবস্থা হচ্ছে বাঙালিদের মেসের যেই অবস্থা থাকে ওইরকম। সব জিনিসপাতি র‍্যান্ডম জায়গায় থাকে। টিশার্ট কয়েকটা জানালার পাশে, রুমের কোণায় ট্রলি রাখা - সেটার উপরে হুডি দুইটা, শেলফের উপরে জায়নামাজ আর শেল্ফের মধ্যে কিছু নাই। টেবিলের পাশে পিয়ানো কীবোর্ডটা দাঁড় করানো। যাচ্ছেতাই অবস্থা আরকি। একই অবস্থা আমার রুমমেটের। ওয়ারড্রবে এক দলা কাপড়ের মধ্য থেকে ও যে কীভাবে নিজের দরকারি জিনিস খুঁজে পায় আমার কোন আইডিয়া নাই। প্রোবাবলি আমাকে গুম করে ও এই কাপড়ের স্তুপের মধ্যে লুকায় রাখতে পারবে।

যাই হোক, এই রুম শেষবার ভালোভাবে গুছানো হইসিল রোজার ঈদের সময়। ওই সময় রাশান বন্ধুবান্ধব দাওয়াত দিসিলাম, এইজন্য গুছানো লাগসে। কুরবানির ঈদে অনেক রান্না করসি কিন্তু দুইজন ক্লোজ ফ্রেন্ড বাদে কাউকে জানাইও নাই রুম গুছানো লাগবে দেখে।

প্রতি সপ্তাহে রুম ক্লিনাররা এসে রাশান ভাষায় বলে যায় যে রুম এত আউলাঝাউলা না রাখতে। যদিও আমরা গায়ে মাখি না কারণ ওদের কাজ হইতেসে ফ্লোর মুছা আর বাথরুমে ক্লিনার ইউজ করা - রুম গুছানো দিয়ে ওদের কোন কাজ নাই।

দুইদিন আগে রুমমেট জানালো যে তার গার্ল্ফ্রেন্ড পিতারবুর্গ থেকে আসবে। আমি বললাম “গুড”। গতকাল রাতে জিজ্ঞেস করলো যে রুমে ওই মেয়ে আসলে প্রবলেম আছে নাকি। বললাম যে আমার বিছানায় কিছু না হইলে আমার কোন প্যারা নাই। তো সে-ও হাইসা উড়ায় দিলো।

কালকে (টেকনিকালি আজকে) রাত ৫টায় ঘুমাইসি। আমাকে সকাল ১০টায় উঠায় দিয়ে বললো যে রুম গুছাতে হবে। ফার্স্টে বুঝি নাই কাহিনী কী, ঘুমের ঘোর কাটার খেয়াল হইসে কাহিনি।

এরপর আমাদের কাপড়চোপড় সব শেল্ফে পুরা হইসে, বিছানার চাদর ঠিকমতো কর্নার মেইনটেইন করে পাতা, সিংক খালি, স্টোভের পাশে কোন তেলের দাগ নাই ব্লাহ ব্লাহ ব্লাহ।

এখন আমি রিডিং হলে বসে আছি। রুমে গেলে কেউ বিলিভ করবে না যে ওইটা আমাদের রুম। পিক রোমান্টিসিজমের জন্য, কীবোর্ডটাও টেবিলের উপর রাখা।

ঈদ উপলক্ষেও যেই কাজ করি নাই, পিতারবুর্গের গার্ল্ফ্রেন্ডের জন্য ওইটা আমাকে দিয়ে করানো হইসে। Ngl “ব্যাডা মানুষের জাতটাই খারাপ!”